বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
গরু-ছাগলসহ কোরবানির পশুর স্থানীয় উৎপাদন বেড়েছে চট্টগ্রামে। এই বছর চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর স্থানীয় উৎপাদন ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি।২০১৯ সালে চট্টগ্রামে গরু-ছাগলসহ কোরবানি পশুর স্থানীয় উৎপাদনের এই সংখ্যা ছিলো ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি। সেই হিসাবে এইবার গরু-ছাগলসহ প্রায় ৮০ হাজার বেশি কোরবানি পশু উৎপাদন হয়েছে চট্টগ্রামে।
চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা এবং মেট্রোর ৩টি থানায় খামারি রয়েছেন ৪ হাজার ৭৭৮ জন। কোরবান উপলক্ষে মৌসুমী খামারি হিসেবে এই বছর পশু উৎপাদনে ভূমিকা রেখেছেন আরও ৩ হাজার ২৯৩ জন।
সব মিলিয়ে ৮ হাজার ৭১ জন খামারি এই বছরের কোরবান উপলক্ষে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি কোরবানির পশু উৎপাদন করেন। এর মধ্যে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭২টি গরু, ৫৭ হাজার ১৩১টি মহিষ, ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৪৪টি ছাগল, ৪১ হাজার ২৬৬টি ভেড়া এবং ১০৯টি অন্যান্য পশু।
কোথায় কত পশু উৎপাদন
প্রাণিসম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে মিরসরাইয়ে ৩৫৯ জন খামারি ৪৯ হাজার ৯৬৯টি পশু উৎপাদন করেন। সীতাকুণ্ডে ২২০ জন খামারি ৩৯ হাজার ৪৪১টি পশু, সন্দ্বীপে ১২২ জন খামারি ৫৯ হাজার ৮৮২টি পশু উৎপাদন করেন।
ফটিকছড়িতে ৩৩৬ জন খামারি ৪৪ হাজার ২৮৯টি পশু, রাউজানে ৪৪০ জন খামারি ৩৩ হাজার ৫১৭টি পশু, রাঙ্গুনিয়ায় ৪৩৭ জন খামারি ৩৯ হাজার ৬৮৪টি পশু উৎপাদন করেন।
হাটহাজারীতে ৫৩৪ জন খামারি ৩৯ হাজার ৭৪৪টি পশু, বোয়ালখালীতে ৫১২ জন খামারি ৪০ হাজার ২৫টি পশু, পটিয়ায় ৯৯৭ জন খামারি ৬২ হাজার ৬২৮টি পশু উৎপাদন করেন।
চন্দনাইশে ৬৫২ জন খামারি ৩৮ হাজার ৮০১টি পশু, আনোয়ারায় ৮১০ জন খামারি ৫৪ হাজার ৯২৪টি পশু, সাতকানিয়ায় ৪৩৭ জন খামারি ৩৬ হাজার ৬৬৫টি পশু উৎপাদন করেন।
লোহাগাড়ায় ৭১৪ জন খামারি ৩৮ হাজার ১৪৫টি পশু, বাঁশখালীতে ২২৪ জন খামারি ৩৫ হাজার ৬৭৯টি পশু, কর্ণফুলীতে ৭৭৫ জন খামারি ৪৬ হাজার ৭৫৩টি পশু উৎপাদন করেন।
কোতোয়ালী থানায় ১১৭ জন খামারি ৪ হাজার ১৩১টি পশু, ডবলমুরিং থানায় ১৩৯ জন খামারি ৮ হাজার ৩টি পশু এবং পাঁচলাইশ থানায় ২৪৫ জন খামারি ১৬ হাজার ৭০১টি পশু উৎপাদন করেন।
পশু উৎপাদন বেড়েছে তিন কারণে
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারত থেকে গরু আমদানি প্রায় বন্ধ থাকায় দেশে এখন গরুর দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তাই অনেকেই গরুর খামার করছেন। ফলে খামারি এবং উৎপাদন বেড়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে বিয়ে এবং মেজবানিতে মাসে ৩ থেকে ৫ হাজার গরু-মহিষ এবং ২ থেকে ৩ হাজার ছাগল জবাই করা হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে মার্চ থেকে বিয়ে-মেজবান বন্ধ থাকায় গত প্রায় ৪ মাসে গরু-ছাগল তেমন জবাই হয়নি। ফলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার গরু-মহিষ এবং ৮ থেকে ১০ হাজার ছাগল এবার কোরবানিতে যোগ হয়েছে।
এ ছাড়া বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি খ্যাত চট্টগ্রামে করোনার কারণে সব মাজারে ওরস, ফাতেহা এবং মিলাদ মাহফিল বন্ধ থাকায় সেখানে যে পরিমাণ গরু-মহিষ এবং ছাগল জবাই হওয়ার কথা তা কোরবানিতে যুক্ত হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেয়াজুল হক বাংলানিউজকে জানান, এই বছর কোরবানিতে গরু-ছাগলসহ পশুর চাহিদা রয়েছে ৭ লাখ ৩১ হাজার। চট্টগ্রামে গরু-ছাগলসহ কোরবানির পশু উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি।
তিনি বলেন, এই বছর গরু-ছাগলসহ কোরবানি পশুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাহিদা এবং উৎপাদন প্রায় কাছাকাছি। আশা করি, কোরবানিতে পশুর কোনও সংকট হবে না।‘উৎপাদনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী বছর পশু উৎপাদন কোরবানিতে চাহিদার চেয়ে বেশি হবে। ’ সুত্র:বাংলানিউজ।